ববি প্রতিনিধি:
বরিশাল শহরের নিকটবর্তী কর্ণকাঠীর শান্ত পরিবেশে থাকা বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের ৫৩ একর জুড়ে এই সময় যেন শুধুই কাশফুলের রাজত্ব। শরতের পদচারণায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রাঙ্গণ এখন পরিণত হয়েছে এক শুভ্র স্বর্গীয় ভূমিতে, যেখানে প্রতিটি ধাপে ধাপে মেলে ধরেছে কাশফুল তার কোমল রূপ।
চোখে পড়ার মতো কাশফুলের ঢেউ খেলানো দৃশ্য মুহূর্তেই মন কাড়ে, বিভিন্ন জায়গা থেকে ছুটে আসা দর্শনার্থীদের।
কাশফুলের শুভ্রতা বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়কে দিয়েছে এক ব্যতিক্রমী পরিচিতি। এর পাশ দিয়ে বয়ে চলা কীর্তনখোলা নদীর হালকা স্রোত আর শান্ত বাতাস যেন শরতের এক কাব্যিক ব্যাখ্যা হয়ে ধরা দেয়। চারপাশে কাশফুলের শুভ্রতা আর হাওয়ার দোলায় সৃষ্টি হয় এক নিঃশব্দ সংগীত, যা হৃদয় ছুঁয়ে যায়।
বিশ্ববিদ্যালয় প্রাঙ্গণে এখন যেন একধরনের নিঃশব্দ ও শান্ত সৌন্দর্যের রাজত্ব। শরতের এই দিনে কেউ ক্যামেরায় ধরে রাখছেন মুহূর্তগুলো, কেউবা নিঃশব্দে হাঁটছেন কাশবনের মধ্যে দিয়ে। প্রতিটি মোড় যেন এক নতুন ফ্রেম, প্রতিটি দোলা যেন এক নতুন অনুভব।
প্রতিদিন শত শত মানুষ বরিশাল ও আশপাশের এলাকা থেকে ছুটে আসছেন এই স্বাভাবিক অথচ ব্যতিক্রমী দৃশ্য দেখতে। পরিবার, বন্ধু কিংবা একান্ত কারো সঙ্গে কিছু সময় কাটানোর জন্য এরকম পরিবেশ যেন এখন দুর্লভ। কাশফুলের মাঝে দাঁড়িয়ে মানুষ যেন খুঁজে পান নিজেকে।
যদিও অতীতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রমে কিছু কাশবন কেটে ফেলা হয়েছিল, তবুও প্রকৃতির নিজের নিয়মে আবার জন্ম নিয়েছে নতুন ফুল। কাশফুল ফের ফিরে এসেছে আরও বেশি প্রাণময় হয়ে, শরতের বার্তা নিয়ে।
এবার দর্শনার্থীর উপস্থিতি বিগত বছরের তুলনায় চোখে পড়ার মতো বেশি। শিক্ষার্থীরা যেমন এই সময়টাকে উপভোগ করছেন, তেমনি বাইরের মানুষরাও ক্যাম্পাসে ঘুরতে এসে এক ধরনের মানসিক প্রশান্তি পাচ্ছেন।
কাশফুল এখানে শুধু একটি ফুল নয় এটি যেন এক ঋতুবদলের নিঃশব্দ ভাষা, যা বলে দেয়: প্রকৃতি কখনও থেমে থাকে না, ফিরে ফিরে আসে তার আপন ছন্দে। বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের শরতের এই রূপ তাই শুধু চোখের নয়, এটি এক অনুভবেরও নাম।